নির্মিত হোক উম্মুক্ত স্মৃতিসৌধ

0
2036

“৪২ বছর বন্দী পটুয়াখালীর সর্ববৃহৎ বধ্যভূমি”

অবিলম্বে পুরাতন জেলখানা ভেঙ্গে নির্মিত হোক উম্মুক্ত স্মৃতিসৌধ

আমাদের শহর কি ইতিহাসের কুখ্যাত কারা-দ্বীপ সেন্ট হেলেনা, আন্দামান, রোবেন আইল্যান্ড কিংবা অধুনা গুয়েন্তানামো বে’র মতো কোন মৃত্যুকুপের নগরী? তবে তার হৃদপিন্ড জুড়ে থাকবে কেন বৃহদায়তনের একটি দুর্ভেদ্য কারাগার? বরং গর্বকরেই বলতে পারি আমার শহর কোন সন্ত্রাস অধ্যুষিত আতংকিত জনপদ নয়। হাজার বছরের ঐতিহ্য নিয়ে প্রাচীন এই নদীবন্দরটি দেশের যেকোন পুরনো জেলা শহরের তুলনায় এটি আজও নিষ্পাপ, নিষ্কলুষ, পবিত্র, খাল-নদীঘেরা, ছায়া-সুনিবিড় সবুজ শহর।

স্বাধীনতার ৪২ বছর ধরে লোকচলক্ষুুর অন্তরালে দুর্ভ্যদ্যে পাঁচিল ঘেরা পুরাতন কারাগারের অভ্যন্তরে শুয়ে আছেন জাতির সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সন্তান মহান বিপ্লবী হিরালাল দাশ গুপ্তসহ মুক্তিযুদ্ধের নাম না জানা অগনিত শহীদ। এটি মহান মুক্তিযুদ্ধের এতদ্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি। কারাগারাটি পরিত্যাক্ত হওয়ার পর আজও এটি খুলে দেয়া হয়নি জনসাধারণের জন্য। হতভাগা আমার সেইসব পূর্বপুরুষ উত্তরপ্রজন্মের মুক্তির জন্য, স্বাধীন একটি দেশের জন্য নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েও আজ বন্দী তাদের পবিত্র সমাধি। আনসারের দখলে থাকায় কারাবন্দী কবরে কেউ আসেনা ফুল দিতে, শহীদের বিদেহী আত্মার জন্য কেউ পড়েনা সুরা ফাতেহা কিংবা ‘আস্সালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কবুর’, শহীদ স্মরণে সেখানে দু ফোঁটা অশ্রু ফেলারও অধিকার নেই আম জনতার। পিডিএসের কোনায় রাস্তার উপর জেলা পরিষদের দায়সারা গোছের একটি শহীদ স্মৃতিসৌধ কে কেন্দ্র করেই জেলার শহীদস্মৃতির সব আয়োজন। স্বাধীনতার প্রথম প্রজন্ম হিসেবে এ দৈন্যতার দায় আমাদেরও; উত্তর পুরুষকে কি জবাব দিব আমরা?

সময় এসেছে জনমত গঠনের। সময় আজ দাবী জানাবার; সময় আজ গর্জে ওঠার- “অবিলম্বে পুরাতন জেলখানা ভেঙ্গে নির্মিত হোক একটি নান্দনিক উম্মুক্ত স্মৃতিসৌধ; লেকের জলে সৌধের মায়াবী ছায়ায় নগর সৌন্দর্য্যরে নতুন মাত্রায় গড়ে উঠুক বীরের রক্তে গড়া একটি আধুনিক পর্যটন নগরী- প্রিয় পটুয়াখালী”।